Rita Bhowmick – SAWM Sisters https://dev.sawmsisters.com South Asian Women in Media Sat, 15 Apr 2023 08:13:27 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.6.1 https://dev.sawmsisters.com/wp-content/uploads/2022/08/sawm-logo-circle-bg-100x100.png Rita Bhowmick – SAWM Sisters https://dev.sawmsisters.com 32 32 বিনামূল্যের টিকায় সার্ভিস চার্জের নামে অর্থ আদায় https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%82%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ad%e0%a6%bf/ Sat, 15 Apr 2023 08:13:27 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6646 This story first appeared in https://epaper.kalbela.com/

শিশু জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যে পাঁচবার টিকা দিতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় প্রত্যেক নবজাতককে কমপক্ষে পাঁচবার টিকাকেন্দ্রে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও অভিভাবকদের গুনতে হচ্ছে টাকা। এনজিওর মাধ্যমে শিশুকে এই টিকা দেওয়ার কারণে সংস্থাগুলো অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘সার্ভিস চার্জের’ নামে নিজেদের ইচ্ছামতো টাকা নিচ্ছে। রাজধানীর পূর্ব মেরুল বাড্ডার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের নিমতলী রোডের পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকে (পিসিডিও) শিশুর অভিভাবকদের কাছ থেকে বিনামূল্যের টিকার বিপরীতে টাকা নেওয়ার সত্যতা মেলে।

শিশুদের যে টিকাগুলো দিতে হয়, সেগুলো হলো—প্রথমবার বিসিজি, পেন্টা-১, ওপিভি-১, পিসিভি-১ এবং আইপিভি-১, দ্বিতীয়বার পেন্টা-২, ওপিভি-২, পিসিভি-২, তৃতীয়বার পেন্টা-৩, ওপিভি-৩, পিসিভি-৩ এবং আইপিভি-২, চতুর্থবার এমআর প্রথম ডোজ, পঞ্চমবার এমআর দ্বিতীয় ডোজ।

২৯ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে দেড় মাসের ছেলে মুয়াজকে পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছিলেন মাহফুজা। তিনি জানান, প্রথমবার বিসিজি, ওপিভি-১ এবং আইপিভি-১ তিনটি ডোজে তাকে গুনতে হয়েছে ৫০০ টাকা। পরে বলে দিয়েছে, বাকি দুটি এক সপ্তাহ পর ৫ এপ্রিল নিতে গেলে লাগবে ৪০০ টাকা। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চমবার টিকা দিতে আরও টাকা গুনতে হবে তাকে। প্রথম তিনটি ডোজে ৫০০ টাকা নিলেও কার্ডের ভেতরে বামপাশের কর্নারে অঙ্কে ৩০০ লেখা রয়েছে। বাকি ২০০ টাকার কথা কার্ডে উল্লেখ নেই। ৫ এপ্রিল পেন্টা (ডিপিটি, হেপ-বি, হিব), পিসিভি টিকা দিতে গুনতে হয়েছে ২০০ টাকা। রসিদ চাওয়ায় ৪০০ টাকার কথা বললেও নেয় ২০০ টাকা। আনাড়ি হাতে প্রথমবার নবজাতকের দুই হাতে টিকা দেওয়ায় রক্ত বের হচ্ছিল।

প্রতিবার টিকার জন্য টাকা চাওয়া প্রসঙ্গে মাহফুজা বলেন, টিকাদানকারীকে জিজ্ঞেস করি এটি তো সরকারি টিকা। আপনি টাকা নিলেন, প্রাপ্তির রসিদ দিন। তারা রসিদ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। প্রথমবার তারা রসিদ না দিলেও দ্বিতীয়বার অর্থ প্রাপ্তির রসিদ দিয়েছে।

আরেক অভিভাবক তার নবজাতককে তৃতীয় ডোজ দিতে নিয়ে এসেছিলেন এখানে। প্রথম-দ্বিতীয় ডোজ চট্টগ্রামে দিয়েছেন। অন্যদের সঙ্গে টিকা দেওয়ার দরদাম দেখে তিনি এগিয়ে এসে বলেন, একেক ডোজ টিকা দিতে এত টাকা লাগবে? তাহলে আমার ছেলের কত টাকা লাগবে? টিকাদান কর্মী তানিয়া তাকে বলেন, ২০০ টাকা। কার্ডও করতে হবে। তিনি অবাক হয়ে বলেন, একেক ডোজ ২০০ টাকা! অভিভাবক আগের টিকা প্রদান কার্ডের ফটোকপি তাদের সামনে এগিয়ে দিতেই পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের ম্যানেজার মাসুমা ইসলাম বলেন, এই কার্ডে হবে না। আপনি চট্টগ্রাম থেকে দুইবার দিয়েছেন। এখানে নতুন কার্ড বানাতে হবে।

ওই অভিভাবক অনুনয়-বিনয় করে বলেন, ‘আপা আমি অনেক গরিব মানুষ। ওখানে ৩০ টাকা দিয়ে টিকা দেওয়ালাম। আমার যদি এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য থাকত, তাইলে সরকারি টিকা দেওয়াতে আসতাম না।’

নবজাতককে নিয়ে তৃতীয়বার টিকা দিতে আসেন আরেক মা। সচ্ছল পরিবারের হলেও তিনি টিকাদানকারীকে বলেন, অন্য জায়গায় তো অনেক কম টাকা রাখে। আপনারা কম রাখছেন না কেন? এই কথার প্রেক্ষিতে টিকাদানকর্মী তানিয়া সেই অভিভাবককে তিরস্কার করে বলেন, তিনটি খাতা মেইনটেইন করতে হয়। একজনের সুঁই খুলতে হয়। একজনকে ধরতে হয়। এত কিছুর জন্য কি একটি সার্ভিস ফি থাকবে না? প্রতি উত্তরে অভিভাবক বলেন, টিকা তো বিনামূল্যে সরকার থেকে দেওয়ার কথা।

অভিভাবকের কথোপকথনে রাগান্বিত হয়ে পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের ম্যানেজার মাসুমা ইসলাম বলেন, এত কথা বলেবেন না। টিকা দেওয়ার হলে দেন।

২৯ মার্চ নবজাতকদের টিকা কার্ডে টিকা দানকারীর নামের নিচে লেখা রয়েছে তানিয়া। তানিয়া আক্তার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা নবজাতকদের টিকা দেন। গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকে গেলে দেখা যায় টিকাদানকারী তানিয়া আক্তার চেয়ারে বসে এবং একজন কর্মী বেঞ্চে শুয়ে জি বাংলার সিরিয়াল ‘মিঠাই’ দেখছিলেন। নবজাতককে নার্স না ডাক্তার টিকা দেন এ বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয় তানিয়া আক্তারের কাছে। তিনি এ সম্পর্কে কোনো কথা না বলে উল্টো প্রতিবেদকে জিজ্ঞাসা করেন, তথ্য কী কারণে লাগবে? টিকা দেওয়ার খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে ভদ্রমানুষ পুলিশ, এসপি, ডিসি, উকিল আসে। এই প্রতিষ্ঠান সরকারি না, এনজিও। যাদের টাকা নাই, তাদের ফ্রি টিকা দিই।

টিকা বাবদ টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে পরিবারের স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিকের ম্যানেজার মাসুমা ইসলাম কালবেলাকে বলেন, দেড় থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের টিকা প্রদানে ৫০ থেকে ১০০ টাকা সার্ভিস চার্জ নেওয়া হয়। প্রত্যেক অভিভাবককে টিকাদানের রসিদ দেওয়া হয়। অথচ প্রথম দিনে তিনটি ডোজের জন্য টাকা নিয়েও রসিদ না দেওয়ার ব্যাপারে তিনি অভিভাবককে বলেছিলেন, এটি এনজিও। আপনাদের পরে রসিদ দেব। কিন্তু সেদিনের রসিদ অভিভাবকরা আর পাননি।

ডায়রিয়ার টিকার জন্য টাকা চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি কালবেলাকে বলেন, ডায়রিয়ার টিকা বেসরকারি। কোম্পানির দামে বিদেশের টিকার দাম ৩ হাজার এবং দেশেরটা ১ হাজার ২০০ টাকা পড়বে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার এসএম আব্দুল্লাহ আল মুরাদ কালবেলাকে বলেন, টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনের আওতায় এনজিওগুলোকে টিকাদানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তারা নবজাতকদের সরকারি টিকার ডোজগুলো নিয়মিত দিয়ে থাকে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান কালবেলাকে বলেন, সিটি করপোরেশনের নিজস্ব কর্মী না থাকায় এনজিওর মাধ্যমে টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই টিকা এনজিওদের বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। সরকারের লক্ষ্য হলো শিশুদের শতভাগ ভ্যাকসিনের আওতায় আনা। এনজিওরা তেজগাঁও থেকে এই টিকা সংগ্রহ করে নিজ নিজ কেন্দ্রে নিয়ে যায়। যাতায়াতের খরচটা তাদেরই বহন করতে হয়। কর্মচারীর বেতন দিতে হয়। সেজন্য নামমাত্র চার্জ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। যদিও সার্ভিস চার্জ নেওয়ার অনুমতি নেই। সেক্ষেত্রে তারা যদি অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ আদায় করে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি এনজিওকে বাদ দিয়েছি। ফলে সেই এলাকার টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ হয়ে গেছে। ওই এলাকার শিশুরা ভ্যাকসিনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

Link to original story

]]>
কম বয়সে সন্তান ধারণ বাড়ায় মৃত্যুঝুঁকি https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%95%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a7%9f%e0%a6%b8%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a3-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a7%9c%e0%a6%be%e0%a7%9f/ Thu, 06 Apr 2023 10:04:59 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6619

১৮ বছরের আগে বিয়ে ও অন্তঃসত্ত্বা হলে গর্ভপাতসহ প্রসবকালীন মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। তেমনি প্রাকৃতিক দুর্যোগও গর্ভবতীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় তাদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। লিখেছেন রীতা ভৌমিক

কম বয়সে বিয়ে, অপুষ্টির শিকার মেয়েটির ১৭ বছর বয়সে গর্ভধারণ, আট মাসের গর্ভবতী অবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই। রীতা আক্তার নামে মেয়েটি নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে একজন অপুষ্ট সন্তানের জন্ম দেয়। স্বামী-শ্বশুরের জীবিকার তাগিদে নেত্রকোনা থেকে পরিবারের সঙ্গে সিলেট আসেন তিনি। ওর স্বামী, শ্বশুর যা রোজগার করে তা দিয়েই চলে তাদের আট সদস্যের সংসার। গত বছর জুনের মাঝামাঝিতে সকালে ওর স্বামী-শ্বশুর কাজে চলে যায়। বেলা বাড়তেই বন্যা ও ভারি বর্ষণে সিলেট শহরে শাহি ঈদগাহ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। গভীর ড্রেন ভরে পানি তীব্রগতিতে বস্তির ঘরগুলোতে ঢুকতে থাকে। শাশুড়ি, ছোট ননদ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যায়। কিন্তু ও ঘর থেকে বেরোনোর আগে কোমরপানি হয়ে যায়। ঘরে আটকা পড়ে যায় ও। কিছুক্ষণ পর শাশুড়ির খেয়াল হয় ছেলের বউ তাদের সঙ্গে নেই। খোঁজাখুঁজি শুরু হয়।

বস্তির কাছেই হুমায়রা আহমেদ জেবার বাড়ি। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেন। তার বাড়িটা একটু উঁচু হওয়ায় বস্তির লোকেরা সেখানেই আশ্রয় নেয়। সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে হুমায়রা আহমেদ জেবা বলেন, গর্ভবতী মেয়েটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না শুনে আমি এগিয়ে যাই বস্তির দিকে। একজন লোক তার

স্ত্রী-সন্তানকে আমাদের বাড়িতে রেখে আবার বস্তির ঘরে যান দলিলপত্র নিয়ে আসার জন্য। কোমরপানিতে মেয়েটি দাঁড়িয়ে কী করবে বুঝতে পারছিল না। আমার একার পক্ষে ওকে কোলে নিয়ে আসা সম্ভব ছিল না। লোকটির সহায়তায় ওকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসি। ঘরে এনে ওর ভেজা কাপড় বদলে দিই। ভয়ে ও কথা বলতে পারছিল না। হাত-পা সাদা হয়ে যায়। সেবা-শুশ্রূষা করে স্বাভাবিক করতে ঘণ্টাখানেক লেগে যায়। ওকে খাইয়ে-দাইয়ে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি। পরদিন পানি নেমে যায়। ওর শ্বশুর-শাশুড়ি ওকে ঘরে নিয়ে যেতে চাইলে ও যেতে চায় না। ও ট্রমার মধ্যে চলে গিয়েছিল। এ ঘটনায় ওর শারীরিক-মানসিক চাপ পড়ে। যা ওর সন্তানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

রীতা আক্তার বলেন, আমি ঘরে যেতে ভয় পাচ্ছিলাম। প্রচণ্ড বেগে বৃষ্টি হচ্ছিল। যদি আবার ঘরে পানি ঢুকে যায়। আমি তো দৌড়ে বের হতে পারব না। আমার সন্তানের কী হবে। সবার কথায় ঘরে এলেও ভয়ে ভয়ে থাকি। ৯ মাস পড়তেই প্রচণ্ড ব্যথা ওঠে, ব্লিডিং হয়, পানি ভাঙে। গরিব মানুষ, টাকাপয়সা নেই। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। জেবা আপাকে খবর দিই। জেবা আপা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় আমাকে মাতৃমঙ্গল ক্লিনিকে নিয়ে যায়। ডাক্তাররা সিজার করার কথা বলে। জেবা আপা টাকা জোগাড় করে অপারেশনের খরচ দেয়। কম ওজনের শিশু হওয়ায় বাচ্চাকে অক্সিজেন দিতে হয়। মেয়ের বয়স এখন আট মাস। মেয়ে সুস্থ হলেও আমার শরীর ভালো যায় না। দুর্বল অনুভব করি।

২০২১-এর জুন থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ‘মনিটরিং দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব এসডিজিস ফর এনশিওরিং গার্লস অ্যান্ড চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপে জানা যায়, সর্বনিম্ন আয়ের পরিবারে (মাসিক ২৫০০ টাকা) ১৮ বছর বয়সের আগে গর্ভধারণের হার সবচেয়ে বেশি (৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ)। জরিপে অংশগ্রহণকারী নারীদের ৩৫ দশমিক ৮ শতাংশই জানান, তারা ১৮ বছর বয়সের আগেই গর্ভধারণ করেন, এর হার রংপুরে সর্বোচ্চ (৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ)। জরিপে আরও দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের (১৪-৪৯ বছর বয়সী নারী) ৯৩ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত এবং ৭৮ দশমিক ৪ শতাংশ তা অনুসরণ করেন। ৬৯ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবারে পুরুষ এবং নারী সদস্য একত্রে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেন। এ পদ্ধতি সম্পর্কে তারা তথ্য পান মূলত টেলিভিশন (৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ), কমিউনিটি ওয়ার্কার (৩৩ দশমিক ২ শতাংশ) এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (২৯ দশমিক ৫ শতাংশ) থেকে।

বারডেম জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ও অবসের অধ্যাপক সামছাদ জাহান শেলী জানান, প্রত্যেক মেয়েকে পরিণত বয়সে বিয়ে ও সন্তান নিতে হবে। অপরিণত বয়সে প্রজনন অঙ্গের বিকাশ সম্পূর্ণ হয় না। তাই অপরিণত বয়সে মা হলে ত্রুটিপূর্ণ শিশু জন্ম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া শরীরকে তৈরি না করে সন্তান নিলে কম ওজন, অপুষ্টি, গঠনগত প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে। অন্যদিকে গর্ভকালে গর্ভবতী মা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খেলে ভ্রূণের গঠনগত বিকলাঙ্গ দেখা দেয়। আবার মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত হয়। ফলে শিশু বিকলাঙ্গ অথবা প্রতিবন্ধী হয়। তাই গর্ভধারণের আগে অপুষ্টি রোধে পুষ্টিকর খাবার খেয়ে রক্তশূন্যতা পূরণ করতে হবে। সন্তান ধারণের শুরু থেকেই প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম খেতে হবে। ভ্যাকসিন রুবেলা নিতে হবে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (কৈশোরকালীন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য), এমসিএইচ ইউনিটের ডা. মনজুর হোসেন বলেন, কিশোর-কিশোরীদের উন্নয়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। সবার স্বাস্থ্য উন্নয়ন কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। সব সংস্থার সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাদের একত্রে কাজ করতে হবে। বাল্যবিয়ে এবং কৈশোরকালে গর্ভধারণের হার কমাতে আমাদের কাজ করতে হবে। এ জন্য জন্মনিবন্ধনের যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

]]>
বছরে ১৩ হাজার শিশুরমৃত্যু পানিতে ডুবে https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%ac%e0%a6%9b%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a7%a7%e0%a7%a9-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af/ Sat, 01 Apr 2023 07:55:17 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6602 অন্য আর দশটা গ্রামের মতোই পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ১০ নম্বর বালিয়াতলীর কোম্পানিপাড়া। তবে এ গ্রামের ক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই বসতঘর থেকে পুকুরের দূরত্ব ১০ থেকে ২০ গজ। পুকুরের চারদিকে কোনো বেড়া নেই। শান বাঁধানো ঘাটও নেই। পুকুরে নামার জায়গাটিও পিচ্ছিল গর্তের মতো। ভরদুপুরে শিশুরা সেই পুকুরে গোসল করে। তাদের সঙ্গে থাকেন না কোনো অভিভাবক।

জানা যায়, গত বছর পানিতে পড়া শিশু মৃত্যুতে বরিশাল রয়েছে চতুর্থ স্থানে। বছরের ১৩১ শিশু সেখানে পানিতে ডুবে মারা গেছে।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় সমষ্টি জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম এবং নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা যায়।

জিএইচএআইয়ের তথ্যমতে, দেশে ৮০ শতাংশ শিশুর মৃত্যু ঘটে বাড়ি থেকে ২০ গজ দূরে পুকুর, ডোবা বা নালার পানিতে পড়ে। প্রায় প্রতিদিন সব বয়সী ৫০ জন, ১৮ বছরের নিচে ৪০ জন, ৫ বছরের নিচে প্রায় ৩০ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এভাবে বছরে প্রায় ১৩ হাজার শিশু মারা যায়।

বসতঘর থেকে প্রায় ১০ গজ দূরের পুকুরে পড়ে মারা গিয়েছিল সাড়ে চার বছরের ইয়াসিন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ১০ নম্বর বালিয়াতলীর কোম্পানিপাড়া গ্রামে বছর দুয়েক আগে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। আঁচল শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে দুপুর ১টায় বাড়ি ফিরে নাশতা খেয়ে মায়ের কাছে বায়না করেছিল শাক দিয়ে ভাত খাওয়ার। কিন্তু শাক দিয়ে তার আর ভাত খাওয়া হয়ে ওঠেনি। মা কোহিনুর বেগম ছেলের শাক খাওয়ার ইচ্ছে আজও ভোলেননি। পুকুরে গোসল করতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি তার আদরের সন্তান। সন্তানের কথা ভেবে এখনো নিভৃতে কাঁদেন মা।

তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘রান্না করছিলাম। মেজো ছেলেকে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরতে দেখে খোঁজ করি ইয়াসিন কই? ও বলে ইয়াসিন তো পুকুরপাড়ে নাই। এ কথা শুনে দৌড়ে পাকঘর থেকে বেরিয়ে পাড়ে গিয়ে দেখি জুতা ও মগ আছে, ছেলে নাই। ছেলেকে খুঁজতে পুকুরে নামি। আমার স্বামী কইলো, তোমার বইনের বাড়ি মুড়ি ভাজতাছে, সেইখানে গিয়া দেখো। আমার ছেলে মুড়ি খেতে ভালোবাসত। ওই বাড়িতে গিয়া দেখি ইয়াসিন সেখানেও নাই। দৌড়ে এসে বলতেই আমার স্বামী পুকুরে নাইম্যা পানির নিচে গিয়া দেখে ইয়াসিন উপুড় হইয়্যা রইছে। প্রায় ১০ মিনিটের মতো পানির নিচে ছিল। পানি থিক্যা ছেলেরে টাইন্যা তুলি। আমরা  জানতাম না এরপর কী করতে হইব? জ্ঞান ফেরানোর জন্য ঝুলাই, শরীরে কম্বল পেঁচাই। হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা বলেন, রোগী নাই। এরপর লাশ তদন্ত ছাড়াই দাফন করি।’

জিএইচএআইয়ের তথ্যে, দেশে ২০২২ সালে পানিতে ডুবে ৯ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হার বেড়েছে। এ সময় পানিতে ডুবে মৃতদের মধ্যে ৮১ শতাংশের বয়স ছিল ৯ বছরের কম। আগের বছরের তুলনায় এ হার ৮ শতাংশ বেশি। এসব শিশুর ৬১ শতাংশ তাদের চতুর্থ জন্মদিনের আগেই মারা গেছে।

গত ১২ মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পানিতে ডুবে ১ হাজার ১৩০টি মৃত্যুর ঘটনা বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, ২০২০ ও ২০২১ সালে ৯ বছর বয়সীদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার ছিল যথাক্রমে ৬৫ ও ৭৩ শতাংশ। এ দুই বছরে পানিতে ডুবে ৮০৭ ও ১ হাজার ৩৪৭টি মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে।

২০২২ সালে পানিতে ডুবে মৃতদের ৯৪ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এর মধ্যে চার বছর বা কম বয়সী ৫৫৬ জন, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী ৩৬৩ জন, ১০ থেকে ১৪ বছরের ১০২ এবং ১৫ থেকে ১৮ বছরের ৪৩ জন। ৬৬ জনের বয়স ছিল ১৮ বছরের বেশি।

বরিশালের সিআইপিআরবির ফিল্ড টিম ম্যানেজার মোহাম্মদ মোতাহের হুসাইন বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিশুদের মায়েরা গৃহস্থালি কাজে ব্যস্ত থাকেন। সপ্তাহে ছয় দিন আঁচল শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের প্রারম্ভিক বিকাশের মাধ্যমে শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, ভাষাগত, মানসিক ও সামাজিক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় একটি আঁচল (সমন্বিত শিশু বিকাশ ও দিবাযত্ন কেন্দ্র) রয়েছে, যেখানে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ, পানিতে ডোবা শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সমষ্টির পরিচালক মীর মাসরুর জামানের মতে, একটি প্রকল্প প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির ধারণা দিতে পারে। এ সচেতনতাকে গার্হস্থ্য জীবনে কাজে লাগিয়ে এর ধারাবাহিকতাকে ধরে রাখতে হবে। ব্যক্তি ও সামাজিক পুকুরগুলোতে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিতে হবে। পানি থেকে তোলার পর শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা কীভাবে দিতে হয়, সে সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।

শিশুদের দেখে রাখতে হবে যেন তারা পার্শ্ববর্তী পুকুর বা জলাশয়ের কাছে না যায়। এ দুর্ঘটনা রোধে ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে প্রত্যেক শিশুকে সাঁতার শেখাতে হবে। দেশে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে দরকার সচেতনতা। প্রাক-স্কুলের শিশুদের জন্য শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রের সুবিধা নিশ্চিত করা। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সাঁতারে দক্ষ করে তোলা। জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বিনিয়োগ এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।

]]>
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি ৫২ বছরেও https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2/ Mon, 27 Mar 2023 17:21:18 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6496 আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। একাত্তরের এই দিনে এক বিভীষিকাময় রাত নেমে আসে বাঙালি জাতির জীবনে। নিরপরাধ, নিরস্ত্র, ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পূর্বপরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী, বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে চালানো হয় এই হত্যাযজ্ঞ। নির্মম সেই হত্যাযজ্ঞে শহীদদের স্মরণে প্রতিবছর ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়। তবে ৫২ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত মেলেনি সেই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। দিনের পর দিন ফিঁকে হয়ে যাচ্ছে সেই সম্ভাবনাও।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কালবেলাকে বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্যউপাত্ত ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর শক্তিশালী অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের গণহত্যার স্বীকৃতি লাভ কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে সরকার গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে চেষ্টা করছে।’ ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্যাঙ্ক-কামান নিয়ে বের হয়। সেই রাতে ও পরদিন ২৬ মার্চ ঢাকার নীলক্ষেত, পলাশী, রেলওয়ে বস্তিগুলোতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আগুন  ধরিয়ে দেয়। তাদের অনেকেই শহীদ হয়েছেন। তাদের সংখ্যা কত, তা নির্ণয় করা সম্ভব নয়।

পাকিস্তানি সেনাদের হাতে আটক হওয়ার আগে সেই রাতে পরপর তিনবার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রথমটি ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১০টা, দ্বিতীয়টি রাত সাড়ে ১১টা এবং তৃতীয়টি রাত সাড়ে ১২টায়। তার তৃতীয় স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববাসী বাংলাদেশের গণহত্যার কথা প্রথম জানতে পারেন।

স্বাধীনতার ঘোষণাটি ছিল, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অতর্কিত পিলখানায় ইপিআর ঘাঁটি ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স আক্রমণ করেছে এবং শহরের লোকদের হত্যা করেছে। ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে।’

২৫ থেকে ২৭ মার্চ ঢাকায় নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে তিন বিদেশি সাংবাদিক সিডনি শেনবার্গ, জেটলিন ও দ্য টাইমসের সাংবাদিক লুইস হেরেন জানান, এয়ারপোর্টে যাওয়ার সময় তারা স্বচক্ষে দেখেছেন, বস্তির লোকদের হত্যা করা হয়েছে। তাদের মতে, ওই তিন দিনে ঢাকা শহরে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ৭ হাজার শহীদকে শনাক্ত করা হয়।

গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন কালবেলাকে বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট। যদিও গণহত্যার ৫২ বছর পেরিয়ে গেছে। এত বছর পর আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলোকে বিভিন্ন রকম তোয়াজ করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির পক্ষে আমি নই। তিনি বলেন, আমাদের দেশের গণহত্যা প্রচার হোক এটা একসময়ের রাজনৈতিক মহল চায়নি। কিন্তু এখন আমরা বাংলাদেশের গণহত্যার কথা প্রচার করতে পারি। দ্বিতীয়ত এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপালকে বলা যেতে পারে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদানের কথা। এজন্য ইউরোপের দেশগুলোর ওপর নির্ভর করতে হবে কেন? এশিয়া মহাদেশের দেশগুলো তাদের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের গণহত্যার কথা তুলে ধরে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রস্তাব করলেই স্বীকৃতির পথ সুগম হবে।

সেই হত্যাকাণ্ডে শহীদ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ শিক্ষক, ১০১ ছাত্র, ১ কর্মকর্তা এবং ২৮ কর্মচারী। জগন্নাথ হলে গণহত্যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তপন কুমার বর্ধন। পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংসতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে টাঙ্গাইলের কাগমারী সরকারি কলেজের সাবেক এই অধ্যক্ষ বলেন, ‘২৫ মার্চ সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা লক্ষ করি। রেডিওতে জানতে পারি, ইয়াহিয়া ও ভুট্টো ঢাকা ত্যাগ করেছে। আনুমানিক রাত ১২টা-সাড়ে ১২টার দিকে পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র দেবী নারায়ণ রুদ্র পালের ডাকে রুমে তালা লাগিয়ে বেরিয়ে আসি। তিনি আমাকে জানান, হল রেইড হতে পারে। আমরা নেতৃবৃন্দের কাছে সঠিক সংবাদ জানার জন্য ইকবাল হলের দিকে রওনা হই। ততক্ষণে ইকবাল হলে পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ চালায়। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানি হানাদাররা ইউ.ও.টি.সি অফিসের কাছ থেকে জগন্নাথ হলে আক্রমণ চালায়। আমরা প্রাণভয়ে দৌড়ে হলের কর্মচারী সীতানাথের কোয়ার্টারে ঢুকি। পাকিস্তানি সেনারা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, মর্টার ও মেশিনগান ব্যবহার করে নিরস্ত্র ছাত্রদের হত্যা করে। কোনো ছাত্র পেয়ে গেলে ওরা পৈশাচিক আনন্দে চিৎকার করে বলছিল, ‘ওস্তাদ, চিড়িয়া মিল গিয়া।’ হানাদাররা চলে গেলে হামাগুড়ি দিয়ে ডাইনিং হলের পাশ ঘেঁষে গেটে এসে দেখি অসংখ্য লাশ স্তূপাকারে পড়ে আছে।’

গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ‘ঢাকায় গণহত্যার প্রথম পর্ব’ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে এসআই, সুবেদার, নায়েক, হাবিলদার, সিপাহিসহ প্রায় দেড়শ বীর পুলিশ যোদ্ধা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হন। একাত্তরের ২৫ থেকে ২৮ মার্চ ঢাকা জেলায় ৫০, ঢাকা বি আর পির ১৪০ পুলিশ নিহত হন। ঢাকার টেলিকম অফিসের ৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী শহীদ হন। একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনারা নারিন্দা, পুরানা পল্টন, কোতোয়ালি, বাবুবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণ চালিয়ে নিরীহ পুলিশদের হত্যা করে। ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনারা শাঁখারীবাজারে দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার দিকে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে ১৪ জনকে হত্যা করে। মোট ৫৪ জন শহীদ হন শাঁখারীবাজারে। ২৮ মার্চ রাজাকাররা ডা. নিশি হরি নাগকে (৬৫) হত্যা করে। ২৭ মার্চ সকাল ১১টার দিকে পাকিস্তানি সেনারা বিউটি বোর্ডিং ঘেরাও করে। মালিক প্রহ্লাদ চন্দ্র সাহাসহ তার বন্ধুবান্ধব, বোর্ডার, কর্মচারীসহ ১৯ জনকে ধরে নিয়ে যায়। অন্যত্র নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা ১৮ জনকে হত্যা করে। একাত্তরের ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অতর্কিত আক্রমণ চালায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বারা নিহত ৫৯ জন শহীদের নাম পাওয়া যায়।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হরিনাথ দেকে ২৭ মার্চ মালাকাটোলার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। তার ছেলে চক্রপানি দে (লাপ্পু) কালবেলাকে বলেন, ২৭ মার্চ রাতে হানাদাররা বাবাসহ আমাদের প্রতিবেশী ইন্দ্রমোহন পাল, বিপ্লব কুমার দে খোকন, দুলাল চন্দ্র দে, লালমোহন সাহা, মনিলাল সাহা, গোলাপ চাঁন সাহা, ক্ষিতিস চন্দ্র নন্দী, প্রাণকৃষ্ণ পাল, বিশ্বনাথ দাসকে (পল্টু) লোহারপুর ব্রিজের সামনে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। একাত্তরের ২৩ মার্চ মিরপুরে কবি মেহেরুন্নেসা তার বাড়িতে স্বাধীন পতাকা উড়িয়েছিলেন। অবাঙালিরা ১৯৭১-এর ২৭ মার্চ সকাল ১১টার দিকে ডি-ব্লকের ৬ নম্বর বাড়িতে ঢুকে কবি মেহেরুন্নেসা, তার মা ও দুই ভাইয়ের শিরশ্ছেদ করে।

রমনা কালীমন্দির ও মা আনন্দময়ী আশ্রমে একাত্তরের ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হামলায় শহীদ হন প্রায় শতাধিক। তাদের মধ্যে মন্দিরের পুরোহিত শ্রীমৎ স্বামী পরমান্দ গিরি, সাংবাদিক শিবসাধন চক্রবর্তীসহ ৫৯ শহীদের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে বললেন পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে আহত শংকর লাল ঘোষ।

ইতিহাসবিদ ড. ফিরোজ মাহমুদ বলেন, একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে সাধারণ মানুষ নীলক্ষেতে শহীদ হয়েছেন। নিউমার্কেটের কাঁচাবাজারের সব কসাইকে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের লাশ ছাগলের সঙ্গে পড়ে ছিল।

ওই সময় আহতদের চিকিৎসা সেবাদানকারী ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না জানান, লালবাগ, আজিমপুর, পলাশীর বস্তিগুলোতে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনারা হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিকাণ্ড চালায়। ২ এপ্রিল বোরকা পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যাই। শিক্ষকদের কোয়ার্টারের দরজা, জানালা খোলা, ঘরের ভেতরে লাশ, ভবনের রেলিংয়ে শকুন দেখি। লাশগুলোকে শকুনে ছিঁড়ে খাচ্ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছিল। কত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এর সংখ্যা বের করতে সময় লাগবে। এই গণহত্যায় আলবদর, আলশামসরাও সহায়তা করেছিল। ঢাকা শহরে একাধিক গণকবর পাওয়া গেছে। ২৫ থেকে ২৭ মার্চ তিন দিনের ঘটনাই গণহত্যা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।

তিনি আরও বলেন, গণহত্যার আন্তজার্তিক স্বীকৃতি পাওয়া একটি রাজনৈতিক বিষয়। আমেরিকা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে সহায়তা করেছিল। সেই আমেরিকার অনেকে একাত্তরের গণহত্যাকে জেনোসাইড বলছে। যুদ্ধে সহায়তা করার কারণে আমেরিকা বিভিন্ন অজুহাতে গণহত্যার স্বীকৃতি দিচ্ছে না।

এদিকে, বাংলাদেশ সফররত এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটসের প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক বার্জেস সম্প্রতি এক সেমিনারে বলেন, বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম রক্তপাতের ঘটনাকেও গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। অথচ বাংলাদেশে অভ্যুদয়ের সময় সংঘটিত গণহত্যার প্রতি বিরূপ আচরণ করা হচ্ছে।

]]>
মহান স্বাধীনতা দিবস আজবাংলাদেশের জন্মযাত্রা https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%ae%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a7%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%b8-%e0%a6%86%e0%a6%9c%e0%a6%ac%e0%a6%be/ Mon, 27 Mar 2023 17:19:57 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6494 আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস। ৫২ বছর আগে এই দিনেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশকে দখলদারমুক্ত করার সংগ্রামে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়। স্বাধীনতা দিবসে জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী সেই বীর সন্তানদের, যাদের রক্তের বিনিময়ে এসেছিল মহান স্বাধীনতা।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি ঘাতক সেনাবাহিনী ঢাকায় নৃশংস গণহত্যায় মেতে ওঠে। সে সময় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগমুহূর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে একটি বার্তা পাঠান বঙ্গবন্ধু। বার্তায় তিনি বলেছিলেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। একে যেভাবেই হোক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’ ইপিআরের ওয়্যারলেস থেকে তার এই বার্তা প্রচার করা হয়েছিল।

‘দ্য টাইমস’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে ঢাকায় অবস্থিত গোপন বেতার থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বকণ্ঠে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা। ঢাকায় অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ টিক্কা খান এবং তার সহকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছিলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, এবার তিনি শাস্তি এড়াতে পারবেন না।

এর আগে একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলেও এর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ঐতিহাসিক এ ভাষণের শেষ পর্যায়ে তিনি বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

তারও আগে একাত্তরের পহেলা মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের ডাক ও আপসহীন নেতৃত্ব পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের মনে ভীতির সঞ্চার করেছিল। বাংলাদেশের জনগণও তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মহান স্বাধীনতা দিবসে দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনগুলোতে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জা করা হবে। একইভাবে সাজানো হবে দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদকদল বাদ্য বাজাবে।

স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি : দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। দেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : আজ সূর্যোদয়ের ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন। ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবে আওয়ামী লীগ। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়ার কর্মসূচি : আজ সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একটি প্রতিনিধি দল টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন। দলের সদস্যরা হলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান।

বিএনপির কর্মসূচি : দিবসটি উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি। গতকাল শনিবার আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করেছে দলটি। আজ ভোরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে বিএনপি কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এরপর সকাল ৭টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে নেতারা যাত্রা করবেন। সেখান থেকে ফিরে শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আগামীকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। জেলা-উপজেলায় দলের অঙ্গসংগঠনগুলোও কর্মসূচি পালন করবে। এ ছাড়া বাকি সাত দিন আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে। সব শিশু পার্ক ও জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ ওইদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।

]]>
৭১ বছর পরও স্মৃতিতে জ্বলজ্বল ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি https://dev.sawmsisters.com/%e0%a7%ad%e0%a7%a7-%e0%a6%ac%e0%a6%9b%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%93-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%b2%e0%a6%9c/ Wed, 01 Mar 2023 17:15:56 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6394 প্রতিভা মুৎসুদ্দি থাকেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনীর কোয়ার্টারে। একজন সিস্টার তার দেখাশোনা করছেন। এ বয়সেও রুটিনমাফিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত তিনি। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠেন, প্রাত্যহিক কাজ সেরে চা-জলখাবার খেয়ে ঘণ্টাখানেক হাঁটেন। এরপর একটু বিশ্রাম নিয়ে পত্রিকা-বই পড়েন। টেলিভিশন দেখেন। সকাল ১০টায় ফল খান। দুপুর ১২টার দিকে ওষুধ খান। এরপর ঘণ্টাখানেক বারান্দায় বসে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন। […]]]>

প্রতিভা মুৎসুদ্দি থাকেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কুমুদিনীর কোয়ার্টারে। একজন সিস্টার তার দেখাশোনা করছেন। এ বয়সেও রুটিনমাফিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত তিনি। সকাল ৬টায় ঘুম থেকে ওঠেন, প্রাত্যহিক কাজ সেরে চা-জলখাবার খেয়ে ঘণ্টাখানেক হাঁটেন। এরপর একটু বিশ্রাম নিয়ে পত্রিকা-বই পড়েন। টেলিভিশন দেখেন। সকাল ১০টায় ফল খান। দুপুর ১২টার দিকে ওষুধ খান। এরপর ঘণ্টাখানেক বারান্দায় বসে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন। ১টার দিকে স্নান সেরে প্রার্থনার পর দুপুরের খাবার, ওষুধ খেয়ে বিশ্রাম নেন। বিকেল ৫টায় চা-জলখাবার খেতে খেতে টেলিভিশন দেখেন। রাত ৮টার দিকে ফোনে সবার খবরাখবর নেন। ৯টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ পর ঘুমুতে যাচ্ছেন।

কেমন আছেন বলতেই প্রতিভা মুৎসুদ্দি বললেন, শরীর তেমন ভালো না। বছরখানেক আগে পড়ে গিয়ে ডান হাতে আঘাত পেয়েছিলাম। এখনো মাঝেমধ্যে ব্যথা করে। কানেও কম শুনি।

প্রতিভা মুৎসুদ্দি একজন শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ এবং কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান অনেক। ছাত্রজীবনে তিনি যেমন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে দেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছেন, মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথে নেমে কারাবরণ করেছেন, তেমনি শিক্ষাক্ষেত্রকেও নকলমুক্ত করার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসর নিলেও শিক্ষাক্ষেত্র থেকে তিনি সরে দাঁড়াননি। বরং ভারতেশ্বরী হোমসসহ কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ, কুমুদিনী হাসপাতাল স্কুল অব নাসিংয়ের কর্মকাণ্ডে এখনো সক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন।

ভাষাসৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দির জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার মহামুনি পাহাড়তলী গ্রামে। বাবা কিরণ বিকাশ মুৎসুদ্দি ছিলেন আইনজীবী। মা শৈলবালা মুৎসুদ্দি ছিলেন গৃহিণী। ১৯৪৮ সালে তিনি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ৩০ জানুয়ারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা মহাত্মা গান্ধী নিহত হলে অন্যায়ের প্রতিবাদে সভা, মিছিল করেন। কাঙালিভোজ দেন। এ বছরই মে মাসে স্বৈরাচারী পাকিস্তান সরকার কৃষকদের অধিকার আদায়ের বিরোধিতা করে কৃষক হত্যা করে। ঘটনাটি ছিল চট্টগ্রামের মাদারশায় খাল কাটা নিয়ে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন কৃষক নিহত হন। ওইদিন প্রতিভা অসুস্থতার কারণে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারেননি। তার ছোট বোন ছিলেন এ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। বিদ্যালয়ে এসে কৃষক হত্যার সংবাদ শোনামাত্র ছোট বোন দ্রুত বাড়ি ফিরে পুরো ঘটনাটা প্রতিভাকে জানান। ছোট বোনের মুখে এ হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে তিনি দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বিদ্যালয়ে চলে এলেন। কৃষক হত্যার প্রতিবাদে ছেলেমেয়েদের ক্লাস বর্জন করে মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য বেরিয়ে আসতে অনুরোধ করেন। শিক্ষকরা স্কুল থেকে মিছিল বের করতে দেবেন না। মিছিল বন্ধ করার জন্য ছেলেদের ক্লাসে ঢুকিয়ে দেন। এতে এতটুকু দমলেন না প্রতিভা। বরং তিনি মুখে চোঙা লাগিয়ে ছেলেদের ক্লাস বর্জন করে বাইরে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান। শিক্ষকরা তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ মেনে নিতে পারলেন না। সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক তার জেঠামশায় হৃদয় মুৎসুদ্দিকে ডেকে ঘটনাটি জানান। এও জানান, তিনি প্রতিভাকে এ বিদ্যালয়ে রাখবেন না। জেঠামশায় তার বাবাকে ঘটনাটি জানালে মেয়ের দুঃসাহসিকতা দেখে ভীষণ ক্ষেপে যান।

‘উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’—মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর এ অন্যায় ঘোষণার প্রতিবাদে পূর্ব বাংলার ছাত্র-জনতা রোষে ফেটে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলন সংগ্রাম কমিটি গঠন করে। চট্টগ্রামেও মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন সংগ্রাম কমিটি গড়ে ওঠে।

প্রতিভা মুৎসুদ্দি বলেন, ১৯৫২ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আমি। ভাষার দাবিতে মাহবুব উল আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ ছাত্রসমাজের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিই। অন্যান্য স্কুলের ছাত্রছাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে মিছিল, সভা, স্লোগান করি। পোস্টার লিখি। বাবা কখনোই চাইতেন না আমি রাজনীতিতে জড়াই। অভিভাবকদের বাধাকে উপেক্ষা করে মাতৃভাষার দাবিতে রাজপথে নেমে মিছিল, সভা, স্লোগানে অংশ নিই। চট্টগ্রাম রাষ্ট্রভাষা কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব উল আলম চৌধুরীর আহ্বানে ৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে ধর্মঘট পালন, মিছিল ও সভায় যোগ দিই। ২১ ফেব্রুয়ারি পালনের জন্য আগের দিন সারা রাত জেগে পোস্টার লিখি। ঢাকায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে বিকেলে শিক্ষার্থীদের এক বিরাট মিছিল নিয়ে ডা. খাস্তগীর স্কুলে যাই। ভাষা আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে ঢাকার ছাত্রদের ওপর পুলিশি জুলুমের কথা এবং ছাত্র হত্যার কথা মেয়েদের অবগত করি। সেখান থেকে ট্রাকে করে মেয়েদের মিছিল নিয়ে চট্টগ্রামের সারা শহর প্রদক্ষিণ করি। আমাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিভিন্ন নারী সংগঠন। চট্টগ্রামের সর্বদলীয় কর্মপরিষদের হয়ে সেদিন রাজপথে নামেন শেলী দস্তিদার, প্রণতি দস্তিদার (পূর্ণেন্দু দস্তিদারের বোন), মীরাসহ সিনিয়র শিক্ষার্থী সুলেখা, মিনতি, রামেন্দ্র, সুচরিত চৌধুরীসহ আরও অনেকে।

১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টকে জয়যুক্ত করার আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় অংশ নেন। ১৯৫৫ সালে মার্শাল ল’ জারি হওয়ার পর সভা-মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সাবসিডিয়ারি পরীক্ষা চলছে। তাই ২১ ফেব্রুয়ারির সভায় যাওয়া থেকে বিরত থাকেন। এদিকে সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। কিন্তু হঠাৎ সকাল ১১টার দিকে খবর পান মিটফোর্ড ও মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অপরাধে গ্রেপ্তার ছাত্রীদের মুক্তির দাবিতে প্রতিভা মুৎসুদ্দি কামরুন নাহার লাইলী, রওশন আরাসহ আরও ৮-১০ জনের একটি দল নিয়ে উইমেন্স হল থেকে মিছিল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সারিবদ্ধ মিলিটারির ভেতর দিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের আমতলায় সমবেত হন। হঠাৎ পুলিশের লাঠিচার্জে ছাত্রছাত্রীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। প্রতিভা নিজেও লাঠির আঘাতে আহত হন। তারা প্রথমে কমনরুমে পরে গ্রন্থাগারে গিয়ে আশ্রয় নেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন, একা বের না হয়ে একসঙ্গে বের হবেন। তারা বের হলে ওই সময় যত ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে লুকিয়ে ছিল তারা বের হয়ে আসেন। পুলিশ প্রায় কয়েকশ ছাত্রছাত্রীকে লালবাগ থানায় নিয়ে যায়। প্রতিভাকেও তাদের সঙ্গে

পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।  

]]>
কেমন আছেন কুমুদিনী হাজং https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%95%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a6%a8-%e0%a6%86%e0%a6%9b%e0%a7%87%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%80-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%82/ Mon, 20 Feb 2023 13:56:12 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6333 নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কুল্লাগুড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রাম। এই গ্রামের একটি গারো পাহাড়ে দেখা মিলল এক বৃদ্ধার। বাড়ির বারান্দার ধুলোমাখা মেঝেতে শুয়ে ছিলেন। চুলগুলো উস্কো-খুস্কো, হাত-পা খসখসে। শরীরে যেন কতদিন সাবান-তেল পড়েনি। দেখে মনে হলো, তাকে যত্নআত্মি করার বা ওষুধপথ্য দেওয়ার কেউ নেই। পরনের কাপড়ও ধুলো-ময়লায় একাকার। বলছিলাম ব্রিটিশ শাসনামলের ঐতিহাসিক টংক ও হাজং বিদ্রোহের জীবন্ত কিংবদন্তি […]]]>

নেত্রকোনার দুর্গাপুরের কুল্লাগুড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রাম। এই গ্রামের একটি গারো পাহাড়ে দেখা মিলল এক বৃদ্ধার। বাড়ির বারান্দার ধুলোমাখা মেঝেতে শুয়ে ছিলেন। চুলগুলো উস্কো-খুস্কো, হাত-পা খসখসে। শরীরে যেন কতদিন সাবান-তেল পড়েনি। দেখে মনে হলো, তাকে যত্নআত্মি করার বা ওষুধপথ্য দেওয়ার কেউ নেই। পরনের কাপড়ও ধুলো-ময়লায় একাকার।

বলছিলাম ব্রিটিশ শাসনামলের ঐতিহাসিক টংক ও হাজং বিদ্রোহের জীবন্ত কিংবদন্তি কুমুদিনী হাজংয়ের কথা। ১২ বছর বয়সে স্বামীর সঙ্গে তিনি টংক আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ডাক দিতেই চোখ মেলে তাকালেন। এরপর দুর্বল শরীরে ধীরে উঠে বসলেন। বললেন, জ্বর হয়েছিল। জ্বরে ভুগে দুর্বল হয়ে গেছি। কানে শুনি না, চোখে দেখি না। ৯৫ বছর বয়সের দ্বারপ্রান্তে এসে নানা অসুখ শরীরে বাসা বেঁধেছে তার।

তিন ছেলের মধ্যে কুমুদিনী হাজংয়ের সঙ্গে থাকেন মেজো ছেলে অর্জুন হাজং ও তার পরিবার। গারো পাহাড়ে ২ একর ২ শতাংশ জমি নিয়ে তার বাড়ি। সম্প্রতি তাকে দুকক্ষবিশিষ্ট পাকা ঘর উপহার দিয়েছে দুর্যোগ  ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সে ঘরে থাকেন ছেলে, তার বউ ও নাতি-নাতনিরা। আগে একটি টিনের ঘর তুলে দিয়েছিলেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন। কুমুদিনী হাজং থাকেন সেই ঘরে। এই বয়সে এসেও নিজের কাজগুলো নিজেই করেন। ডোবায় গিয়ে গোসল করেন। প্রতিদিনের কাজগুলো সারেন। ছেলে অর্জুন হাজং জানালেন, সিঁড়ি দিয়ে উঠতে-নামতে কষ্ট হয়। তাই পুরোনো ঘরেই থাকেন মা।

এই গ্রামে ৫ কাঠা জমিও আছে কুমুদিনী হাজংয়ের। ছেলে আর তার বউ চাষ করেন। প্রতি মাসে উপজেলা প্রশাসন থেকে এক বস্তা চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবণ, ডিম, ফল, শাড়ি, কম্বল দেওয়া হয়। এর বাইরেও ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতা করেন কেউ কেউ। সরকার থেকে পান বয়স্ক ভাতাও।

সময়টা ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল। টংক প্রথার কারণে খাজনা পরিশোধ করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছিলেন হাজং সম্প্রদায়ের কৃষকরা। জমিদার পরিবারের সন্তান হয়েও এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহ। তার নেতৃত্বে নানা দাবিতে চলছিল টংক আন্দোলন।

সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কুমোদিনী হাজং বলেন, অনেক কিছু ভুলে গেছি। কিন্তু কমরেড মনি সিংহের কথা আজও মনে আছে। আমার স্বামী লংকেশ্বর হাজং ও তার তিন ভাই টংক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিয়ের পর আমিও তাদের সঙ্গে যুক্ত হই। আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাই। এ কারণে জমিদার ও ব্রিটিশ বাহিনীর নজর পড়ে আমার স্বামী ও তার ভাইদের ওপর। এ সময় সুসং দুর্গাপুর হাই স্কুল মাঠে দ্বিতীয় পর্যায়ে টংক প্রথা উচ্ছেদ আন্দোলনের প্রস্তুতি সভা হয়েছিল। এর পরই ১৯৪৬ সালের ১ জানুয়ারি দুর্গাপুর থানার বিরিশিরিতে এক ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র ক্যাম্প স্থাপন করে ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেল বাহিনী। সেখান থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে হানা দিয়ে আন্দোলনকারীদের দমনে চেষ্টা চলতে থাকে।

কুমুদিনী হাজং আরও বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল আমাদের বাড়িতে হানা দিয়েছিল। খবর পেয়ে আমার স্বামী ভাইদের নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। তাদের ধরতে না পেরে সেনারা ক্ষেপে গিয়ে মেয়েদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে আমার কাছে জানতে চায়, লঙ্কেশ্বর হাজং কোথায় আছে? আমি বলি, ‘জানি না।’ তারা আমাকে বিরিশিরি সেনা ছাউনিতে ধরে নিয়ে যেতে চায়। সেদিন আমাকে ছাড়িয়ে নিতে শতাধিক হাজং নারী-পুরুষ তাদের পথরোধ করেছিল। সেনারা তাদের কথা না শুনে আমাকে নিয়ে রওনা দেয়। রাশিমনি নামে এক হাজং নারীর নেতৃত্বে দিস্তামনি হাজং, বাসন্তী হাজংসহ ১২ নারীর একটি সশস্ত্র দল আমাকে ছাড়িয়ে নিতে তাদের পথরোধ করে। সেনারা তাদের ওপর গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই মারা যান রাশিমনি হাজং। তাকে ধরতে গেলে পুরুষ দলের নেতা সুরেন্দ্র হাজংকেও হত্যা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সেনাদের ওপর বল্লম ও রামদা দিয়ে হামলা চালায় হাজংরা। দুই সেনা সেখানেই নিহত হয়। বাকিরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। আমার সম্মান বাঁচাতে সেদিন দুজন মানুষ জীবন দিয়েছিলেন। সেদিনই শপথ নিয়েছিলাম, টংক আন্দোলনে অংশ নিয়ে ব্রিটিশদের এ দেশ থেকে তাড়াব।

কুমুদিনী হাজংয়ের সংগ্রামের সেই গল্প শুনতে শুনতে সময় গড়িয়ে যায়।

টংক আন্দোলনের এই নেত্রী এখন কেমন আছেন, জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজিব উল আহসান বলেন, গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে নিয়মিত ওনার খোঁজখবর রাখা হয়। অসুস্থতার খবর পেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তিন মাস পরপর আমি নিজেও তাকে দেখে আসি।

]]>
সদিচ্ছাই প্রেরণা জোগায় https://dev.sawmsisters.com/%e0%a6%b8%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%a3%e0%a6%be-%e0%a6%9c%e0%a7%8b%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a7%9f/ Mon, 20 Feb 2023 13:45:59 +0000 https://sawmsisters.com/?p=6330 কয়েক বছর আগেও দলিত সম্প্রদায়ের মেয়েরা নিজের অধিকার, ইচ্ছার কথা বলার সাহস পেত না। সব ধরনের অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত ছিল। সুইপারের কাজ করে টাকা রোজগার করলেও নিজের প্রয়োজনে খরচ করার অধিকার ছিল না। স্বামী তাদের রোজগারের টাকা দিয়ে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরত। এরপর বৌকে পেটাত। মেয়ের নিজের পছন্দ করে বিয়ে করার কথা বলার অধিকার […]]]>

কয়েক বছর আগেও দলিত সম্প্রদায়ের মেয়েরা নিজের অধিকার, ইচ্ছার কথা বলার সাহস পেত না। সব ধরনের অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত ছিল। সুইপারের কাজ করে টাকা রোজগার করলেও নিজের প্রয়োজনে খরচ করার অধিকার ছিল না। স্বামী তাদের রোজগারের টাকা দিয়ে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরত। এরপর বৌকে পেটাত। মেয়ের নিজের পছন্দ করে বিয়ে করার কথা বলার অধিকার ছিল না।

মনি রানী দাস এ নারীদের জীবনমান বদলাতে দলিত নারী ফোরাম নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এখন এ সংগঠনের সংখ্যা ১১টি। এ সংগঠনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করছেন। দলিত সম্প্রদায়ের মেয়েরা ঘর থেকে বেরিয়ে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। নিজের অধিকারের কথা বলতে পারছে।

এভাবেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে দলিত নারীদের ঘর থেকে বের করে আনার প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন মনি রানী দাস। তিনি বলেন, নারী-পুরুষ সমান অধিকার। এ অধিকার থেকে নারী কেন বঞ্চিত থাকবে। তারা কেন সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে না। এ ভাবনা থেকেই দলিত নারী অর্থাৎ পিছিয়ে পড়া নারীদের সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিই।

মনি রানী দাসের জন্ম, বেড়ে ওঠা রাজধানীর হাজারীবাগের গণকটুলী সুইপার কলোনিতে। তার পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের বিলাসপুর থেকে। ব্রিটিশরা সুইপারের চাকরি দিয়ে তাদের এখানে নিয়ে আসে। বাড়িতে তারা হিন্দিতে কথা বলতেন। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে মনি রানী দাস ছোট। বাবা-মা দুজনই তাদের ভাইবোনদের অনেক যত্ন করে গড়ে তুলেছেন। তারা চাইতেন ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াক। দলিত সমাজে জন্ম হওয়ার কারণে তারা যাতে পিছিয়ে না পড়ে। মনি রানী দাস পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করেন। স্বামী রাম স্বরূপ এয়ারপোর্টে বিমানে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে চাকরি করেন। তাদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে।

হাজারীবাগ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন মনি রানী দাস। কিন্তু সুইপারের মেয়ে বলে সহপাঠীদের কাছে উপহাসের পাত্রীও হয়েছেন। বাড়ি ফিরে বাবা চুন্নী লালকে বললে, বাবা তাকে বলতেন, ‘এসব কথা কানে দিও না। লেখাপড়া শিখে মানুষ হও।’

কিন্তু সহপাঠীদের উপহাস তাকে কষ্ট দিত। নিজ সম্প্রদায়ের মেয়েরা যাতে ঘর থেকে বের হয়ে নিজের পরিচয় গড়ে তোলে, তাদের অবস্থার পরিবর্তন করে এ নিয়ে তিনি ভাবতেন। তাই ছেলেবেলায় লেখাপড়ার পাশাপাশি মামা হরিচরণ দাসের উৎসাহে মুকুল ফৌজে যোগ দেন। মুকুল ফৌজে যুক্ত হয়ে অনেক মানুষের সংস্পর্শে আসার সুযোগ হয় তার। তার কাছ থেকে অনেক কিছু জানার সুযোগ পান। নিজের জানাকে কাজে লাগিয়ে নিজ সমাজের মানুষরা এতদিন ধরে যে কুসংস্কারগুলো লালন করে আসছিল, তা নিরসনে উদ্যোগ নেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মনি রানী দাস দলিত সমাজের উন্নয়নে ২০০৬ সালে দলিত নারী ফোরাম নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। তাদের অবস্থান পরিবর্তন কীভাবে করা যায় এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ‘দলিত’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। ২০১১ সালে জাতীয় বাজেটে দলিতদের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়। দলিত সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের জন্য আবেদন করি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকার। এ অধিকার থেকে আমরা দলিত নারীরা কেন বঞ্চিত থাকব। আমাদের মেয়েরা কেন সব অধিকার পাচ্ছে না। বিভিন্ন কনফারেন্সে অংশ নিয়ে ভারতের দিল্লিতে দুবার, গুজরাটে দুবার, নেপালে ১৬-১৭ বার, লন্ডন, সুইজারল্যান্ড, জাপান গিয়েছি। মাইনরটি ফোরামের পক্ষে দলিত নারীদের অবস্থান নিয়ে জেনেভায় হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রামে বক্তৃতা দিয়েছি।

মনি রানী দলিত জনগোষ্ঠীর আট দফা দাবি উত্থাপন করেন। জাত-পাত ও পেশাভিত্তিক বৈষম্য প্রতিরোধে প্রস্তাবিত ‘বৈষম্য বিলোপ আইন’ দ্রুত প্রণয়ন, জাতীয় বাজেটে দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য সুনির্দিষ্টভাবে ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি’র বরাদ্দ বাড়ানো, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিশেষ বিবেচনায় এনে তাদের সুরক্ষার সব উপকরণ সরবরাহ করা। সব ধরনের সরকারি চাকরিতে দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। জাতীয় সংসদে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে দলিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যানুপাতে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সব মহানগরী ও পৌরসভায় দলিত জনগোষ্ঠীর সবার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দলিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি কোটা প্রবর্তন করা। দলিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঝরেপড়া রোধকল্পে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ। এ জনগোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া।

]]>